রত্ন পাথর সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? Gemstone Benefits in islam
রত্ন পাথর সম্পর্কে ইসলাম কি বলে: বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু আছে সবই মহান আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে। সব কিছু তার আদেশে পরিচালিত হয়। সব কিছু তার তাসবিহ জপে, যা সব ক্ষেত্রে মানুষ অনুভব করতে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সাত আসমান ও জমিন এবং এগুলোর অন্তর্বর্তী সব কিছু তারই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই, যা তার প্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা বুঝতে পার না; নিশ্চয় তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৪৪)
আরও জানুন: রত্ন পাথর শোধন করার নিয়ম ও মন্ত্র জানতে ভিডিওটি দেখুন
রত্ন পাথর সম্পর্কে ইসলাম: সৃষ্টির আশ্চর্য ক্ষমতা?
গবেষণা মূলক এই কাজের দ্বারা কাওকে জ্যোতিষ শাস্ত্র, সংখ্যা তত্ত্ব, রত্ন পাথর বিশারধ অথবা এই সম্পর্কিত কোন বিজ্ঞানে উৎসাহিত করা হচ্ছেনা। এর উদ্দেশ্য শুধু মাত্রই সৃষ্টির আশ্চর্য ক্ষমতা এবং সেই সৃষ্টির স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস আনয়ন করা , জিনি তার বিভিন্ন সৃষ্টির আশ্চর্য ক্ষমতা দ্বারা মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছেন। শুধু মাত্র মানুষের উপকারে জন্য মহান আল্লাহ তার বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষমতা দিয়েছেন।
আরও দেখুন: আমাদের সংগ্রহে রত্নপাথর (Gemstone)
রত্ন পাথর আল্লাহ্রই নিয়ামত?
আল্লাহ তার পছন্দের মানুষদেরই এলেম দান করেন। রত্ন পাথর আল্লাহ্রই নিয়ামত। যা কিনা আল্লাহতালা পবিত্র কোরআন শরিফের সূরা আর-রহমান এর ২২ নং আয়াতে উল্লখে করেছেন “উভয় দরিয়া হইতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল” এবং ২৩ নং আয়াতে মানুষ ও জীন জাতিকে জিজ্ঞেস করেছেন “সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?” তোমরা আমার কোন দানকে অস্বীকার করবে” এরপর কুরআনের অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে যে, পৃথিবীতে আল্লাহ্তালা যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা যে কোন ভাবেই হোক মানুয়ের কল্যাণে আসে।
আরও পড়ুন: দেহের কোথায় তিল থাকলে কি হয়?
রত্নপাথর আল্লাহ্র দান?
মহান আল্লাহ প্রদত্ত রত্ন-পাথর যেমন : জমরুদ, ইয়াকুত, মুক্তা, হীরা, প্রবাল, পোখরাজ ইত্যাদি আল্লাহ্র দান এগুলোকে কি আমরা প্রত্যাখ্যান করতে পারি? ইসলামে রত্ন পাথরের ব্যবহার কতটুকু গ্রহণীয় তার প্রমাণ পাই নবী, রসুল এবং বিশিষ্ট সংস্কারক ও পন্ডিত ব্যক্তিবর্গের রত্ন পাথর ব্যবহারের দ্বারা। যেমন- হজরত আলী (রাঃ) অন্যান্য রত্নের সাথে ইয়াকুত (Ruby) ব্যবহার করতেন। হজরত আলী (রাঃ) এর মতে যে ইয়াকুত ছিল তার উপর বিশেষ আয়াত লেখা ছিল।
আরও পড়ুন: রাশি অনুযায়ী আপনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
রত্ন পাথর সম্পর্কে ইসলাম?
‘মাকারিমূল আখলাক’ এর মধ্যে উল্লেখ আছে যে, হজরত ইমাম মূসা কাজিম (আঃ) এর হাতে যে ফিরোজা (Turquise) রত্ন ছিল তার উপর “আল্লাহ-মালিক” লেখা ছিল। আরও জানা যায় হজরত আলী (রাঃ) এবং হজরত ওমর (রাঃ) যখন যুদ্ধে যেতেন তখন এই ফিরোজা রত্ন হাতের বাজুতে অথবা গলায় পরিধান করতেন। কারণ ইহা বিভিন্ন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে সক্ষম বলে কথিত আছে
সূরা আল জাজিয়া এর ১৩ নং আয়াতে বর্ণীত আছে, “আর তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করিয়াছেন আকাশমণ্ডলী পৃথিবীর সমস্ত কিছু নিজ অনুগ্রহে, চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য ইহাতে তো রহিয়াছে নিদর্শন” এই আয়াত আমাদের শিক্ষা দেয় যে সৃষ্টির সকল জিনিসই মানুষের ব্যবহারের জন্য। সকল কিছুই নির্ভর করে মানুষের প্রজ্ঞার উপর যারা কিনা আল্লাহর আদেশ, নিষেধ এবং নিয়ম কানুন মেনে চলে।
Dr.Robert Frost, a Doctor of Medicine, Basle, Switzerland, সাম্প্রতিক সময়ে রত্নপাথরের উপর বৈজ্ঞানিক ভাবে গবেষণা করেছেন এবং দেখার চেষ্টা করেছেন রত্ন পাথরে কি কি নিরাময় ক্ষমতা রয়েছে। তিনি তার ক্লিনিকাল গবেষণায় দেখেছেন যে সঠিক রত্নপাথর ব্যবহারে ব্যাথা কমে যায়, এলারজি প্রকপ কমে যায়, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয় এবং পেশীর শক্তি বৃদ্ধি পায়।
লাল আকিক পাথর
সহি বুখারি মতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) একটি সীলমোহর স্বরূপ আংটি ব্যবহার করতেন যাতে ইথিউপিয়ার লাল আকিক পাথর বসানো ছিল। তিনি তার ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলে এই আংটি ব্যবহার করতেন এবং তা তাঁর হাতের তালুর দিকে ঘুরানো থাকতো। একটি সঠিক রত্ন পাথর মানুষের জীবনে পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে এবং সঠিক পথের দিকে অবস্থার উন্নতি সাধন করে।
আল্লাহতালা পবিত্র কোরআন শরীফে পাথরকে তার নেয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছে। আল্লাহ্ ষষ্ঠ আসমান সৃষ্টি করেছে মূল্যবান পাথর দিয়ে। তাই ইসলাম ধর্মে এই মূল্যবান রাশিরত্ন পাথরের সম্মান ও মূল্য অপরিসীম। আল্লাহ্ চাইলে তার রহমতের নানা রকম পাথর মানুষের উপকারের উছিলাও হতে পারে। সেই বিশ্বাস থেকেই আমাদের এই প্রচেষ্টা, যাতে করে আপনারা প্রাকৃতিক আসল মূল্যবান পাথর ব্যবহার করতে পারেন।
‘হাজরে আসওয়াদ’—কাবাঘরের দেয়ালে বিশেষভাবে স্থাপনকৃত একটি পাথরের নাম। আরবি ‘হাজর’ শব্দের অর্থ পাথর আর ‘আসওয়াদ’ শব্দের অর্থ কালো। অর্থাৎ কালো পাথর। ‘হাজরে আসওয়াদ’ বেহেশতের মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথর। হজযাত্রীরা হজ করতে গিয়ে এতে সরাসরি বা ইশারার মাধ্যমে চুম্বন দিয়ে থাকেন।
হাজরে আসওয়াদের কিছু বৈশিষ্ট্য
পাথহাদিসের গ্রন্থগুলোতে হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রচুর আলোচনা এসেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতি পাথর, তার রং দুধের চেয়ে বেশি সাদা ছিল
এরপর বনি আদমের পাপরাশি এটিকে কালো বানিয়ে দিয়েছে। ’ (জামে তিরমিজি : ৮৭৭, মুসনাদে আহমাদ, ১/৩০৭, ৩২৯)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘হাজরে আসওয়াদ জান্নাতেরই একটি অংশ। ’ (ইবনে খুজায়মা, খণ্ড: ০৪, পৃষ্ঠা: ২২০)
দুনিয়ার মানুষের কাছে পাথর একটি জড়বস্তু মাত্র, যার কোনো বোধশক্তি নেই, বলার ক্ষমতা নেই, দেখা বা শোনার ক্ষমতা নেই। কিন্তু মহান আল্লাহ এই পাথরকে দিয়েই কথা বলিয়েছেন এবং শেষ যুগেও পাথর কথা বলবে বলে মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে।
আলি ইবনে আবি তালিব বলেছেন, “কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহর সামনে এই কালো পাথর সাক্ষি দেবে কে কে তাকে সম্মানের ও নিষ্ঠার সাথে চুম্বন করেছে”।
কেও একজন বলেছিলেন যে রত্নপাথর উপকার করেনা, এমনকি কোন অপকারও করেনা। আলি (রাঃ) একথা শোনার সাথে সাথে তা বাতিল করে দিয়ে বলেন যে, যারা বিশ্বাস করবে তাদের জন্য যেমন অনেক উপকারী আর যারা অবিশ্বাসীদের জন্য তেমনি অপকারী। (সুত্রঃIdib)
আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) বলেন
আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে মক্কার কোনো এক প্রান্তের উদ্দেশ্যে বের হলাম। তিনি যেকোনো পাহাড় বা বৃক্ষের নিকট দিয়ে যেতেন, তারা তাঁকে ‘আস-সালামু আলাইকুম ইয়া রাসুলাল্লাহ’ বলে অভিবাদন জানাত। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬২৬)
মহানবী (সা.)-এর ভাষ্যমতো মহান আল্লাহর অন্যান্য সৃষ্টির মতো পাথরও আমাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডকে পর্যবেক্ষণ করে, আখিরাতে এই পাথরও আমাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। আবদুর রহমান বিন আবু সাসাআহ থেকে বর্ণিত, আবু সাঈদ (রা.) আমাকে বলেছেন, যখন তুমি গ্রামে বা বন-জঙ্গলে থাকবে, তখন উচ্চৈঃস্বরে আজান দেবে। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) – কে বলতে শুনেছি, জিন, মানুষ, বৃক্ষলতা ও পাথর যে – ই এই আজান শুনবে, সে তার জন্য (আখিরাতে) সাক্ষ্য দেবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৭২৩)
সুবহানাল্লাহ,
এভাবেই মহান আল্লাহ তার অসংখ্য অগণিত সৃষ্টিকে আমাদের খেদমতে নিয়োজিত রেখেছেন। আমাদের উচিত প্রতিমুহূর্তে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। অন্যথায় এই সৃষ্টিগুলোই আমাদের বিপক্ষে সাক্ষী দেবে
এতক্ষণ ইসলামের দৃষ্টিতে রত্ন পাথর ও তার ব্যবহার সম্পর্কে যে বিশ্লেষণ পেশ করা হয়েছে তার দৃঢ় তত্ত্ব উন্মোচনের বিষয়টি ততো সহজ নয়। কারণ এ বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য অনুভূতির তীব্রতা আর নিরলস সাধনা প্রয়োগ প্রয়োজন। ভাসা ভাসা উপলব্ধি এবং মামুলি কিছুটা চর্চা করেই এর মৌল তত্ত্ব উদঘাটন সম্ভব নয়। কারণ আমরা জানি সাগর গর্ভে যে বিপুল রহস্যরাজি লুকিয়ে রয়েছে তা অনুধাবনে আগ্রহী ব্যক্তি যদি হিমালয় শীর্ষে বসে গবেষণা কর্ম শুরু করেন তবে তার পক্ষে এ গবেষণার ফল লাভ আশা করা যেমন হাস্যকর, তেমনি রত্ন পাথর সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জন না করেই এ সম্বন্ধে বিচার বিশ্লেষণ অসম্ভব। তাই আসুন আমরা উদ্বেগহীন শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য ইসলাম প্রদর্শিত নির্দেশনা অনুযায়ী রত্ন পাথর ব্যবহারে প্রবৃত্ত হই। প্রকৃত পক্ষে রত্ন পাথরের গুণাগুণ অনস্বীকার্য। যুগ যুগ ধরে মানবজাতি এর ফলাফল পেয়েছে অনন্ত কাল পাবে।
জ্যোতিষরাজ – দয়াল দেলোয়ার চিশতী- স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত
পুরস্কার প্রাপ্ত রত্ন বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞ বংশগত জহুরী, হস্তরেখাবিদ, গ্রহরত্ন নির্বাচক, জ্যোতিষ শাস্ত্রী, তান্ত্রিক, তন্ত্র শাস্তের উপর বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন।
বাংলাদেশ ও ভারত বর্ষে পুরস্কার প্রাপ্ত দীর্ঘ ৪২ বছরের অভিজ্ঞ রত্ন বিশারদ (রত্ন বিশেষজ্ঞ) বিচক্ষণ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হস্তরেখাবিদ জ্যোতিষ। খাজা বাবার রুহানি সন্তান দয়াল দেলোয়ার চিশতী (Doyal Delower Chishti), তিনি আজমীর শরীফের খেলাফত প্রাপ্ত খাদেম। রত্ন পাথর সম্পর্কে তার রয়েছে ● বাস্তব অভিজ্ঞাতা ● সনাতন এবং ● আধুনিক অভিজ্ঞতা। আর হতাশা নয় সফলতার জন্য আজই চলে আসুন। রত্ন বিশেষজ্ঞ সাথে অনলাইনে নিরাপদে ব্যক্তিগতভাবে কোন সাক্ষাৎকার ছাড়াই চ্যাট এবং কল করে রত্নপাথর বিষয়ে পরামর্শ নিন